Header Ads

কবিতাকণ্ঠ বিজয় দিবস সংখ্যা-০৯

 কবিতাকণ্ঠ 


                               বিজয় দিবস সংখ্যা-০৯
 উৎসর্গ
বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও বিজয় অর্জনে
সকল মুক্তিকামী এবং 
জানা অজানা সকল শহীদদের কে।




প্রকাশ কাল ঃ ২ পৌষ ১৪১৬ বাং 
১৬ ই ডিসেম্বর ২০০৯ ইং 
স্বত্ব ঃ কবিতাকণ্ঠ 
প্রধান পৃষ্ঠপােষক ঃ নাজমুল হক 
প্রকাশনা সেবা প্রকল্প ঃ এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন সম্পাদক, কবিতাকণ্ঠ 
(একটি সাহিত্য সেবা মূলক পত্রিকা, শুধুমাত্র কবিতার) 
প্রচ্ছদঃ কাজী হানিফ 
সম্পাদনা ঃ কাজী হানিফ ও কবির পথিক 
১ স্নিগ্ধা আ/ এ, নিশিন্দারা, উপশহর, বগুড়া - ৫৮০০ থেকে 
এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন কর্তৃক প্রকাশিত, 
দ্যুতি প্রিন্টিং প্রেস, 
বাদুরতলা থেকে মুদ্রিত , 
বর্ণ বিন্যাস ঃ খায়রুল আনাম 
মূল্যঃ ৩৫ টাকা মাত্র 
price : 35 taka only
Spacial supliment of National victory Day 
kobitaKontho Bijoydibos Sonkha 
by kazi Hanif & Kobir Pothik
Published by M, Abdullah Al Mamun
Snikdha R/A, Nishindara, uposhohor, Bogra-5800.



কিছু কথা

          স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার। আর এই অধিকার। আদায় করতে বহু ত্যাগ তিতিক্ষার প্রয়ােজন হয়েছে। সময়ের প্রয়ােজনে। বাংলাদেশ স্বাধীন করার লক্ষ্যে ৭ ই মার্চ ১৯৭১ ইং সনে ঐতিহাসিক। কিছু কথা রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে যার যা আছে তাই নিয়ে ২৬ শে মার্চ ঝাপিয়ে পরেছিল পাকিস্থানি হানাদারদের বিরুদ্ধে মাতৃভূমি স্বাধীন করার লক্ষ্যে। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে অবশেষে পাকিস্থানি হানাদাররা পিছু হটতে বাধ্য হয় এবং তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে ৯৩ হাজার সৈন্য নিয়ে আত্মসমর্পণ করে বাঙালির কাছে পদানত হয় হায়েনারা । ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তে ও মা বােনের সম্রমের বিনিময়ে বিজয় অর্জন করে বাঙালি জাতি। 
আজকের ৩৯ তম বিজয় দিবসে কবিতাকণ্ঠ’র উদ্যোগে প্রকাশিত বিজয় দিবসের বিশেষ সংখ্যা নতুন প্রজন্মের হাতে তুলে দিতে পেরে নিজেকে কিছুটা দায়মুক্ত মনে করছি। আশাকরি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বোভৌমত্বে নতুন প্রজন্ম আরাে বেশী চেতনা লাভ করে সচেতন হয়ে উঠবে দেশ গড়ায়। সেই সাথে তাদের আত্মা শান্তি লাভ করবে যারা মুক্তি যুদ্ধে আত্মনিয়ােগ করে দেশের জন্য প্রাণ বিসর্জন দিয়ে শহীদ হয়েছেন। শ্রদ্ধা ও সালাম জানাই জাতীয় বীরদের। 
কবিতাকণ্ঠ’ নতুন কবি সৃষ্টির প্রয়াসে ধন্য হবে, আমি এটাই আশা করি। 
 কাজী হানিফ 
কবির পথিক




কিছুই হয় নি কোথাও 
                                                             
                                                                         -নাজমুল হক 
 
কখনও তােমার দৃষ্টি হতে বহুদূরে যদি যেতে হয় 
অরণ্য মেঘ চুল উড়িয়ে হাওয়ায় 
অসীম শুন্য চেয়ে থেকো......., 
দু'চোখ বাঁধবে বাসা তবুও ফাগুন। 
ভােরের পাখিরা যদি নাও গান গায় 
তবুও সকাল হবে ধূধূ বালুচর 
আমার শুন্যতা শুধু রিণ-রিণ ব্যথা হয়ে 
সারাটি দিনে রক্ত ঝরবে হৃদয়ে। 
ফুলের পাপড়ি আরও হবে সুন্দর
 নিরবে গাইবে গান মধু, প্রজাপতি অথবা ভ্রমর 
য্যানাে কিছুই হয় নি কোথাও।


জবাব দাও  
                                         
- রােকসানা আনােয়ার নদী, রাজশাহী। 
এক কালাে ইতিহাসের পাতা খুলে বসে আছি 
বুকে আমার হাহাকার 
প্রানে আমার বিষন্নতা 
 চোখে দপ দপ করে জ্বলছে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ 
শরীরের প্রতি কণায় টগবগ করছে রক্ত 
হ্যা ! আমি চেয়েছি নতুন ইতিহাস 
চেয়েছি তােমরা রাজপথে নামাে 
শােক, তাপ, ব্যথা মুছে ফেলতে
 চেয়েছি আমাদের কাছে নতজানু হয়ে
 প্রণাম করক সমস্ত অন্যায় 
নিঃদ্বিধায় ভেবেছি, তােমরাই তাে চোখ বুজে টের পাবে 
ভবিষ্যৎ এর কাহিনী 
মাটির ঘণ শুকে বলে দিতে পারবে 
কত সহস্র শহীদ এখানে ঘুমিয়ে আছে। 
ভেবেছি তােমরা ঝলসানাে রােদে পুড়ে এনে দিবে 
এক বাটি আনন্দ 
কত কতবার ভেবেছি, তােমরা বিশ্ব জয়ের উল্লাসে 
সহদরার প্রশস্ত কপালে চুম্বন একে দেবে। 
কিন্তু না! তােমরা দিয়েছ “২৫ ফেব্রুয়ারী”
 দিয়েছ বুলেটের আঘাতে ঝাঝড়া করা 
তােমার-ই ভাইয়ের এফোর ওফোর করা শরীর
 বােনকে দিয়েছ সাদা কাপড়ে মােড়ানাে মৃত্যু ব্যথা। 
বুকের ঠিক ওখানটাতেই করেছ 
এক নতুন ক্ষত 
ইতিহাসকে দিয়েই কালি লেপটানাে 
একটি পাতা।
 কিন্তু কেন? জাবাব দাও! কেন এই বর্বরতা? 
কেন এই নৃসংহতা, কেন এই রক্ত ক্ষুধা?


“এই দেশ, এই বেশ” 
                                                    
                                                 -কবির পথিক, বগুড়া। 
কেউ কথা রাখে না। 
কেউ কথা রাখে নি 
স্বাধীনতা আর আমি দাড়িয়ে এক বৃন্তে। 
একদিন বন্ধুর প্রশ্ন- 
“তােরও এই অবস্থা! 
তোর না কাড়ি কাড়ি সার্টিফিকেট 
পাহাড় সম মনুষত্ব” 
আমি শুধু আড়ালে গিয়ে বলি- 
“একটা বিড়ি আছে? দে না দোসত, 
এ বুকে বড় জ্বালা।” 
পথে শিক্ষককে সালাম দিতে ধরা পরি- 
“তােমার এই অধঃপতন, 
তােমার না চোখে আগুন ছিল, 
বুক পকেটে খাতা ছিল, 
তুমি না কবিতা লিখতে! 
আমি ফিস ফিস করে বলি- 
সর্টিফিকেট নিবেন স্যার- বিক্রি করবাে।” 
এখন নিজের উপর নিজেরই ঘেন্না হয়
নিজের বুকেই বসাই বর্শা 
এ দেশটাকে, এ সংসদকে বলি
কেউতাে কথা রাখলাে না মাগো, 
কেউ কি কথা রাখবে না! 
তখন কেউ কথা বলে না। 
শুধু একটা ভিখারী এস বলে
 “একটা ভিক্ষা দ্যান গগাে সাব।” 
আমি ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থাকি 
আমি নাকি সাব? আমি হাসি 
আড়ালে গিয়ে বলি- 
একটা ভাঙ্গা থালা দেবে! 
কেউ কথা রাখে না। 
কেউ কথা রাখে নি স্
বাধীনতা আর আমি দাঁড়িয়ে এক বৃন্তে।

 প্রেম। 
                            
                    - অর্ণঃঈক্ষণ, রাজশাহী। 
হৃদয়ের ভংগুর নীচে 
এল তুমি স্বপ্নঘর সাজাতে, 
নতুন অস্তিত্বের জন্ম দিতে, 
বন্ধুর বন্ধু বসুন্ধরাকে বন্ধক দিয়ে। 
কে তুমি? করলে তােমার ছায়া দংশিয়ে অবুঝ হিয়াতে। 
ওহ! স্বর্গীয় প্রেম তুমি?
 যারে লালন করছি প্রতিটি নবজন্মে নব নব স্বপ্নলােকে জোছনাবিহারে 
স্পর্শ করতে চেয়েছি বারংবার, ডেকেছি “সুকন্যা" নামে প্রতিটি নিঃস্বাসে 
তুমি অনুভব করেছাে কখনও আমায়।
 খসে যাওয়া নক্ষত্রের মত মরিচিকা হাসি দিয়ে 
মেঘ- জোছনার লুকোচুরি খেলার মত রহস্য জাল বুনে 
সেই যে চলে গেলে নদীর মত নীল জলরাশির মাঝে হারিয়ে 
আর একলা এই আমি, একা একা বেঁচে থাকা সেই সব স্মৃতি নিয়ে 
সময় গড়িয়ে যায়, প্রেমের অমৃত স্বাদ ফুরিয়ে আসে দিনে দিনে 
তবুও প্রতিক্ষায়, কি ছিল তােমার না বলা ভাষায়, তা জানার আশায়। 
অবশেষে এলে তুমি......... 
যখন হৃদয়ের আবেগ গেছে শুকিয়ে । 
পরিশ্রান্ত মায়াবী জলচোখ নিয়ে, গােধূলীর রং মাখা রাঙানাে আবরণে। 
নগ্ন পায়ে নুপুরের মৃদু ছন্দে, প্রত্যাশিত প্রেমের দুর্গন্ধে 
ঝরে পড়া শুকনাে পাতার মত অবিন্যস্ত ভাবে। বললে, 
“এসেছি ফিরে, প্রেমে নিঃস্ব হয়ে, পূর্নতা পেতে তােমার প্রেমের দ্বারে।” 
অপূর্ন অসহায় প্রেম আমার বুকে চাবুক মারে 
ফিরি যেন তােমার ভালবাসার টানে, প্রেমের আবেশে, বেদুঈন বেশে, 
 কিন্তু সুকন্যা ...........
আবার কেন নীল রং, এলােমেলাে আমার চার পাশে, সবাই হাসছে 
ঘুমের জোয়রে ভাসছে, দুঃখে অভিমানে কাঁদছে। 
আর আমি মৃত্যুর অপেক্ষায় প্রতিটি মুহুর্তে জীবনের গলা টিপছি 
হলােনা ফিরে যাওয়া ওগাে প্রিয়া, প্রেমের নিষ্ঠুর বাস্তবতায় 
বিদ্ধস্ত আমার হিয়া, এতসব না পাওয়া। 
শুধু তােমাই প্রেমের জন্য 
তাইতাে কাউকে হতে দেবােনা প্রেমের জন্য। 
সত্য প্রেমের জন্য হব সবাই বন্য।

নারীর মৃত্যু 
                          
                                    - মাহফুজা, রাজশাহী। 
আমার গায়ে মৃত লাশের গন্ধ 
আনন্দ তােমার শরীরে। 
মােমবাতির আলােয় 
রহস্যময়ী নারীরে - 
খুঁজেছে প্রতিদ্বন্দী অন্ধকারের 
বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিবাদে। 
নারীর আকণ্ঠ নম্রতায় 
মুগ্ধ ছিলে তুমি, 
হয়ত ভান করেছ তাই - 
মৃত্যুতে তুমি শােকাবদ্ধ। 
আর আমার গায়ে 
মৃত লাশের গন্ধ...••••••।

আমাকে সব সইতে হবে 

                                       -মিজানুর রহমান, রংপুর । 
আমি দিনের পর দিন
 অপমানিত হবাে, লােক দেখানাে ভালােবাসায় ভূলবাে। 
কখন দয়া হবে সেই আশায় 
বুক বেধে থাকবো 
হাজার অপমান, ছেট,বড়, জ্ঞানী আবুঝের 
কথার বান সইবাে- আর,
 আর একজন আমাকে ভালােবেসে বুক ভড়বে, 
তাঁর ভালাে না লাগা দূর করবে। 

আমি একেকদিন আকাশের 
আরশ থেকে নর্দমায় পড়ে যাবাে, 
একেক দিন আহ্লাদিত, প্রফুল্ল মনটাকে 
হঠাৎ হঠাৎ বিনা কারনে দুঃখে ভাসাবাে; 
আর একজন ভালবাসায় বুক ভরাবে। 

আমার সুস্থ শরীরটা, মনটা, 
হঠাৎ-ই এমন দূর্বল করবাে যে- 
এক পাও এগুতে পারবাে না। 
প্রশান্ত চক্ষুদ্বয় ক্লান্ত হয়ে 
রক্তাভ অগ্নিমূর্তি বানাবাে। 
অথচ, কিছুই বলতে পারবাে না 
বলেই কারাে কারাে বুক ভেঙ্গে যাবে। 

আমাকে সব সইতে হবে
 সহ্য না হলেও সইতে হবে 
কিন্তু কিছু বলা হবে না। 
তাতে কারাে মান ভেঙ্গে যাবে। 
স্বার্থ রক্ষা হবে না, ভালাে লাগবে না। 
অথচ, 
এটাই নাকি নিঃস্বার্থ ভালােবাসা।।


নীল 
                 
                         -প্রিয় এস, বগুড়া। 
ইচ্ছে! ইচ্ছে! ইচ্ছে! 
ইচ্ছের ডানা মেলে যাচ্ছি দূর দূরান্তে 
আবার, 
আশার ডানায় ভর করে। 
বপন করেছি বীজ নীলক্ষেতের আশাতে। 
নীলক্ষেত! কখন ও কি কিউ দেখেছাে? 
তবুও নীলক্ষেতের স্বপ্ন মনে,
 ভালবাসার নীল রং, 
বিলীন হতে দেখেছি নিমিষেই। 
অথচ নীল, নীল করে, 
জীবন পার করেছি নিজের অজান্তে।
 মিথ্যে আশার ছলনাতে। 
সত্য শুধু বুঝি না কিছু, 
কেন যে নীল স্বপ্নে রঙ্গীন সব, 
আশার মাঝে।


আর কতদিন 

                                  -মোঃ ইউসুফ আহম্মদ (রুবেল), বগুড়া। 
ঈদের জামা পানিতে ভাসে 
ভাসে ভাইয়ের লাশ 
ছােট্ট বুবুর চোখ জুড়ে তাই 
বৃষ্টির বসবাস। 

মায়ের মাতম, একি হল! 
ওরে বুকের ধন 
আশার প্রদীপ নিভিয়ে দিয়ে 
কোথা যায় নির্জন? 

স্বজন হারা মানুষ গুলাে 
কাঁদে পাড়ের বুকে 
আকাশ বাতাস যায় ছেয়ে যায় 
আর্তনাদ আর শশাকে। 

লাল মােহনে লঞ্চ ডুবিতে 
লাশের বাজার ভারী 
বাবুসাৰ সের ঘুম ভেঙ্গেছে 
বলছে নানান জারি। 

খানিক সময় ফের পেরুলেই 
মুখে পরে তালা 
টিনের চশমা কপাল জুড়ে 
আবার একই জ্বালা। 

এইভাবে হায় আর কতদিন 
আর কতকাল চলবে 
এমন স্বীকার হচ্ছে যারা 
আর কতকাল জলবে?


ক্ষণস্থায়ী 

                            - গােলাম রব্বানী, বগুড়া। 
ঐ ভাস্করের মাঝে মানব জীবন মিলে, 
শুধু গমন পথের শাস্ত নিরালা বুঝি; 
হায়াতের তরী এরই মাঝে পাই খুঁজি। 
জীবন কালে ছড়ায়েছে আলাে, ছড়ায়েছে খরতাপ 
তাই বিমােহিত এ ধরিত্রি উচ্ছলিত তার তরে। 
হঠাৎ দেখি যৌবন হারা নিরেট গােলক ভূগর্ভে 
ঢুকছে অবশেষে। 
অল্প বিস্তারে, কালের লীলায়, লােচনে ফাঁকি দিয়ে। 
ডুবে গেল তবু রেখে গেল স্মৃতি, রেখে গেল কিছু বল, 
যার ফলে আজ ধানি এ ধরা এখনও সচল। 
মানব মনে ব্যথার মেঘ আসে অবসাদে, 
অনন্ত যৌবন তেজ মাঝে মাঝে দুর্ভেদ্য মেঘ 
মােড়ায় আল। 
কালের পেরেক তার কল্যাণময় শীর করে রুন্ধ। 
নিরবে নিভৃতে মহাকালের আলােকময় প্রদীপ। 
নেভার মাঝেই তাদের অন্তরের শান্ত অবসান। 
 তবু কেন এতাে ঝংকার পালিত হয় 
হৃদয়ের কোটরে কোটরে।


বদলে ফেল দিন 

                           -সাফল্য মিজান 
ক্ষীণ হাতে গজিয়ে উঠুক 
সত্যের কণা। 
কুৎসার বিক্ষোভ নিত্য জোয়ারে
 মিথ্যার গঞ্জনা 
লােহার সূর্য্য প্রলয় ঘনায়
 বিস্ময়ে স্বপ্নহীন 
আজকে বিদ্রোহ চলে সমারােহ 
বদলে ফেল দিন।।


কেন 

                        -এম. রেজা, বগুড়া। 
যদি আলাের উৎস সূর্যই হয় 
তবে কেন সে সূর্যের খরতাপে 
আলােকিত পাতা পুরে ছাই হয়ে 
অন্ধকারে ডুবে যায়? 

যদি সুখের উৎস ভালবাসাই হবে 
তবে কেন সে ভালবাসার 
অগ্নি শিখায় নিঃশেষ হয়ে 
দুঃখের বন্যা বয়ে যায়? 

যদি বেঁচে থাকার উৎস স্বপ্নই হবে 
তবে সে স্বপ্ন অলৌকিক হয়ে 
কেন দিপ্তময় পথ চলা 
স্ট্যচুর মতাে থমকে দাঁড়ায়?


“সবাই চলে যাবে” 

                         -এ.কে আজাদ, খুলনা । 
সবাই চলে যাবে ঠিক রবে শুধু 
সনাতনী হিসেবের খাতা, কলম 
কাগজে লেখা ইচ্ছার দলিল 
একান্ত প্রকোষ্ঠে পড়ে রবে। 
একদিন মলিনতা মেখে সেও হবে 
ধূসর মেদিনীর মৃত্তিকার 
কোষকলা। 

আসা- যাওয়া চিরন্তনী জগতের খেলা 
সবুজ পত্র মাখে পাণ্ডুরতা 
অতঃপর সেও হয় অস্থির 
উদাস। 
মায়ার আবর্তনে যতদিন থাক 
এ থাকায় ব্যাপ্তি শুধু ভুলের- বীক্ষণ 
মূল থাক যত দূরে ছিড়ে যাবে 
টান লেগে বিদায় বেলায়।


জোনাকি প্রেম 

                       -এন, এস সােহাগ 
পাবে পাবে করেও নৌকাটা 
শেষ ঝাণ্ডারী ছুঁতে পারে না কাছে এসেও।

অসময়ে ঝড়ে পরা বাচ্চার মত 
ঝড়ে পরে বার বার। 
বার বার চোখের কারাগারে 
মৃত্যু হয় 

রুদ্র যৌবন ভরা স্বপ্নের। 
আমি তখন খেলা করি 
সাপ, ব্যাঙ ও মাছদের সাথে 
এলাে মেলাে।

অতঃপর, আব্দুলপুর জং! 

                    -সিরাজুল ইসলাম, খুলনা। 
এখানে এখন অখণ্ড অবসর 
অতি চেনা আব্দুলপুর জংশন, আর
 দম নিতে থাকা ট্রেনের কামরায় 
 চোখ তুলে দূর- আরাে দূর দেখা যায়। 

ও পাশে, প্লাটফরমে শুয়ে 
মঙ্গার দেশ থেকে নিঃশেষ হয়ে 
চলে আসা কিছু মানুষের দল 
বিলি কেটে চুলে, আর অকারণে করে কোলাহল। 

কুকুর কুণ্ডলী পাকিয়ে 
অনাহারের উদাস চোখে তাকিয়ে 
চেয়ে আছে এক অভুক্ত শিশু 
ক্ষুধার্ত চোখ চকচক জ্বলে, যেন একাত্তরের যীশু! 

প্রথম শ্রেণীর কামরায়, কিশােরী অষ্টদশী 
পরণে, ভূষণ দামী জড়ােয়া, নেকলেস, বেনারসী। 
ছুঁড়ে ফেলে দেয় কলার খােসা
 লিপষ্টিকের রং বাঁচিয়ে খাওয়া আপেল, কমলার খােষা! 
যতটুকু প্রায় অর্ধেক তার ফেলে দেয় 
মঙ্গার দেশ থেকে আসা এক কিশাের তা তুলে নেয়। 

হুইসেল দিয়ে গাড়ি ছেড়ে যায় 
কিশােরীর দামী পারফিউম, বাতাসে গন্ধ ছড়ায়। 
ছবি পড়ে থাকে পাটফরমে, মঙ্গার ভাসমান 

ক্ষুধার্ত শিশু, স্বপ্ন দেখে- শরতের খােলা আসমানে।

নিরবতা 

                    -মাসুদ রানা সিজান, বগুড়া।
শুধু হাসতে দেখেছাে, দেখেছাে গাইতে, দেখ নি হাসির পর নিরবতা 
অনিয়ম চলাফেরা, রাস্তায় ঘুরে বেড়ানাে, যা শুধুই উশৃঙ্খলতা 
উত্তর দক্ষিণ যে দিকেই পথচলা, শুধু শুনেছি উপহাস্যের পাত্র, এই আমি 
নাটাই হীন শুন্যে উড়া ঘুড়ি, যার মুক্তির সীমা নেই, ছুটে চলাতেই শুধু পাগলামী 
শুধু আমার উড়ে যাওয়াতে তােমার দৃষ্টি, ঘুরে বেড়ানােতে অপলক চেয়ে থাকা 
শুধু হাসতে দেখাে, গাইতে দেখাে, দেখনি হাসি শেষে নিরবতা। 

আজও দিনের শেষে গভীর রাত্রে সবাই ঘুমে যখন ব্যস্ত 
নিজেকে ব্যস্ত রেখেছি সিলেবাসে, যেখানে তােমাকে খুঁজে পাই। 
আজ নিজে খুঁজে বেড়াও আমার অনিয়ম, উশৃঙ্খল 
নগ্ন পায়ে মাড়িয়ে যাও, আমার সাজানাে স্বপ্নের দল,
 শুধু হাসি শুধু গান, শুধুই তােমার জন্য, 
মাড়িয়ে যাওয়া স্বপ্নগুলাে পথের মােড়ে নিক বাক 
অনিয়ম, উশৃঙ্খল, নিরবতা আমারই থাক !

সংশয় 

                      -রােকেয়া, বগুড়া। 
সংশয় এমন একটি রােগ 
যার ঔষধ নির্ণয় করতে, 
কালের পরিক্রমাই কতনা 
কেমিষ্ট হয়েছে গত । 

তবুও কি কেউ পেরেছে?
 কোন ঔষধী গাছের প্রান রস। 
অথবা পাতা শিকরের প্রলেপ 
সংশয় সেরে তুলতে। 
হয়তাে বা পৃথিবীটাই বলবে 
ইহা একটি মারাত্বক রােগ 
 যার কোন ঔষধ নেই।

অসময়ে জীবন 

                             -শিউলী, রাজশাহী। 
মেঘে ঢাকা অন্ধকার জীবন 
                   হটাৎ একটু রােদের আলাে, 
মুহুর্তেই, ঝলমল চারিদিক, 
                            উৎচ্ছাসিত মন, আনন্দে বিভাের, 
আনমনা অকারণে, জানি না কি কারণে 
                                 হয়তাে তােমার স্পর্শে নয়, অনুভবে, 
বয়সের ভারে নয়, 
তারুণ্যের ছলে, 
হারিয়ে গেছে দুটি মন 
অজানা কোন আনন্দময় ক্ষণে, 
ফিরে দেখি জীবন, 
অতীত মনে পরে, 
মনে হয়, তার তােমায় ফেলে এসেছি 
কতদূরে, 
তবুও মন তাে মন। 
মানে না কোন বাধা, 
হতে চায়, আজও সে, সিতা কিংবা রাধা, 
কিন্তু, বাস্তবতা 
মনে করে দেয় তার স্বার্থের কথা, 
জীবন বলে, হায়রে সময় 
তুই এলি, বড় অসময়, 
সময় বলে, তাের চাওয়া হবে না আর 
পাওয়া, 
তাই তােকে করছি আমি ধাওয়া, 
এখন শুধু ছুটছে জীবন 
জীবনের চাওয়া, 
মাঝে মাঝে, ভাবি আমি, 
এটাই কি জীবন, জীবনের পাওয়া।

অভাব 

                   -মােঃ আঃ হালিম, বগুড়া। 
অভাব এ তাের কেমন স্বভাব? 
কাদাস আমায়, 
পরিশ্রমের লাঠি হাতে, জরাই দিবারাত। 
তোকে দেখি শীতে, বেদনার গীতে, 
থর থরে কাঁপতে বৃদ্ধের বুকে 
ভারসাম্য রাখিস না কেন এসি রুমে ঢুকে 
উলঙ্গ অনাহারে কাঁদতে দেখি, 
৫তলা ফ্লাটে জ্যাম জেলী বাটার হয়ে আহারীকে 
সাধতে দেখি। 
অহংকারী জ্বর হয়ে তােকে দেখি দূ
র দেশে উড়তে, 
হাসপাতালের বারান্দায় তােকে দেখি 
অসহায় হয়ে মরতে। 
উর্বরতার চাহিদা নিয়ে কৃষকের বাগিচায়। 
অর্থলােভী পিপড়ার কাছে বন্দি খাচায়। 
থামবে এবার কবি, 
আমি অভাব গড়ি মানুষের স্বভাব 
আমার জন্য হয় কেউ চোর, 
সততার শঙ্কায় কেউ কাটে অনাহারী ভাের- 
সততা, সহমর্মীতা, নেই কারাে মনে 
                  বৃথা তর্কে হও মত্ত তুমি মাের সনে।

বন্ধ্যা প্রকৃতি 

                  -উম্মে রুমান (বৃষ্টি), বগুড়া।
প্রিয়তমা, শুধু তােমার জন্য 
তােমার জন্য এই কবিতা রচনা; 
ভুলে গিয়েছি সব, তা কখনও ভেবােনা।

 তুমি কি ভুলে গেছ, ভুলে গেছ, 
সেই মহুয়া বনে গন্ধের মাতামাতি! 
হাতে হাত রেখে যেথা হয়েছিনু চিরসাথী । 

আমি ভুলি নাই, 
ভুলি নাই সেই ফুল ফোটা বসন্তের দুপুর, 
তােমার হাসিতে হত আরও মধুর। 
আর সেই চিল ওড়া বিকাল, 
যে বিকেলে কৃষ্ণচূড়া ফুল পেরে দিতে তুমি! 
আর দু’হাত ভরে সে ফুল কুড়ােতাম আমি! 

তাও মনে পড়েনা বুঝি! 
হয়তাে, আরও মনে পড়ে না সেই মায়াবী সন্ধ্যা, 
যার জন্ম দিতে গিয়ে প্রকৃতি আজ বন্ধ্যা। 

কই সেতাে পারে না, পারেনা
পারেনাতো সেই সন্ধ্যাকে আবার জন্ম দিতে! 
               শুধু বন্ধ্যাত্ব নিয়ে আজ নিশ্চল দাঁড়িয়ে সে!

ডাকে 

                    -মশিউর রহমান, নওগাঁ।
বেরিয়ে এসাে নারী 
তােমায় ডাকে 
চেয়ে দেখ, ঐ জানালার পর্দাতুলে 
প্রমাণ সভ্যতার ভগ্ন জীর্ণ স্তুপময় ইটপাথর 
যেখানে নতুন বটের চারা মাথা তুলেছে। 
তােমায় ছায়া শীতল পরশ দেবার তরে বড় হচ্ছে। 
আর মাত্র কিছু দিন 
ততক্ষণ তােমায় ছায়া দেবে; সুনীল আকাশের সাদা বকের মত 
শুভ্র মেঘ গুলি
 চৈত্রের তাপদাহের মাঝে। 

বেরিয়ে এসাে তােমায় ডাকে 
ঐ জংধরা শিকল ভেঙ্গে 
মুক্ত বাতাশ আর পাখীর গানে 
তােমার স্বপ্নগুলিও মুক্ত হবে; পথ খুজে পাবে নুতুবা তৈরী হবে 
গভীর অরণ্যের মাঝে ও হাত ধরে চলবে 
বাস্তবতার।

 বেরিয়ে এসাে 
তােমায় ডাকে 
ঝড় জলের, বর্ষা বাদলের দিনে 
দুয়েল, পাতার আড়াল হতে
 ভিজবে বলে এক সাথে
 ধুয়ে মুছে যাবে পৌঢ় চেতনার সকল গ্লানি এবং ধুলাবালি। 
স্বপ্ন গুলি আশা জাগাবে ময়ূরীর মত 
নৃত্য করে।

মাহেন্দ্রক্ষণ 

                           -আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ
বিদায়ী ফারুনের একটি রঙ্গিন মলাটে 
তােমাকে ডেকে দিতে ইচ্ছে করে 
তােমার কোমল বাহুর দুষ্টুমি করা 
এলােপাথারি স্পন্দন বড় বেশী দোলা দেয় 
অদ্ভুত এক যাদুপুরিতে যার অবস্থান 
তবুও যদি কখনাে সােনালী লােম গুলাে 
ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায় ক্ষুধার্ত কাশফুল 
পড়ন্ত বিকেলের লাল সূর্য আর 
মাঝরাতের এক ফালি বাঁকা চাঁদ 
যদি ঘুমভেঙ্গে শুনতে পাও অস্ফুট আর্তনাদ 
একটি রােমশ বুকের নিঃস্বতা 
যদি কামনার সিঁড়ি বেয়ে উঠে আসে নিয়তি 
তােমার হৃদয়ের কোমল আঙ্গিনায়
 যদি মহেন্দ্রক্ষণ আসে সমর্পণের তবে 
বরণ ডালা সাজিয়ে নিও 
এক চিলতে হাসির আলােয় 
আর অপেক্ষায় থেকো অশ্রু ধারায়।

“ঐশী আহবান” 

                        -মােঃ কাওছার আহমেদ সোহাগ, বগুড়া। 
কিশের খেসারতে হয়ে দায়বদ্ধ? 
কেঁদে ফেরে লাখাে প্রাণ 
কালে প্রাণী শুদ্ধ 
করবে কে অবরােধ করবে কে রুদ্ধ 
করবে কে যুদ্ধ করবে কে যুদ্ধ ।। 

দালালিতে পটু যারা; কয় কথা কটু তারা 
প্রয়োজনে পুঁতে ফেল 
তাদের কে শুদ্ধ; তাদের কে শুদ্ধ ।। 

উঠে এসো নবনীত, শির করে উন্নত 
শোষকের মাথা চিনে কর তারে অবনত 
জিম্মির হাত থেকে জাতি তাই বিবেকেরে 
করে দাও মুক্ত করে দাও মুক্ত। 

অবলার প্রতি যত সবলের অনাচার 
কেন হয় নিয়ত কর এ বিহীত তার 
সঞ্চিত জাতি যারা চরম অসুস্থ 
(তাদের) করে তােল সুস্থ করে তােল সুস্থ। 

উঠে এসে ধর হাল, সন্তান হে দামাল 
থাকবে স্বরণে তুমি চিরকাল, মহাকাল।। 
নােঙর তােল এসে, দিগ্ধি জয়ের বেশে 
স্বাগত জানাতে দেখ মেঘ নাচে এলােকেশে 
তুমিতাে নবনীত, তুমি টীর উন্নত 
তুমিইতাে দেশ মার দামাল ছেলের মত 
তাহলে বসে কেন? উঠে এসাে 
কর তুমি রুগ্ধ; কর তুমি যুদ্ধ।। 

উঠে এসাে হে জোয়ান 
ঘুমঘোর ত্যাগ করে, মনে দৃঢ় প্রত্যয়ে 
বিজয় নিশান হাতে হও আগুয়ান 
ভয় কি সাথে আছে খােদ সুমহান।।

কবিতার কান্না 

                   -অনামিকা, বগুড়া। 
লেখিকা ঃ ও একটা বই ছাপানাের ব্যবস্থা করবেন প্লিজ... 
প্রকাশক ঃ পাণ্ডুলিপিটা রেখে যান। মাঝে মাঝে খবর নিবেন। 
সময় পেলে দেখে রাখব। 
তাছাড়া বইয়ের বিজনেস মন্দাভাব। 
কি করে রিস্ক নেই বলুন? 
হাজার কয়েক টাকা দিতে পারবেন? 
 কিংবা........ 

তারপর আর বলা হয় না। 
চোখ আটকে যায়, থমকে দাঁড়ায় 
বারবার শরীরের মানচিত্রে। 
ফুটে উঠে বন্যতা, চোখের ক্যানভাসে 
ঘরটা ভরে যায় বিকৃতির উল্লাসে... 
বাতাস ভারী হয়ে আসে
 বইয়ের মূল্যবোেধ আটকে থাকে 
অন্ধকার প্রকোষ্টে।

মেয়ে সাহসী হও 

                       -সেলিম আলতাফ, খুলনা। 
এসাে মেয়ে- 
হাতে হাত রেখে জোছনার বৃষ্টিতে 
ভিজে ভিজে যাই নিরন্তর।
 এসাে নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে মিশিয়ে 
অনুভূতির সমুদ্রে ডুবে ডুবে হারাই অঝাের 
তারপর- 
বিন্দুতে বিন্দু ফেনিল সুখের অরুণিমায় 
যা যা হবার তা হবে, 
ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাব অনেক কিছু ।
 তুমি জানাে না মেয়ে- 
ভালবাসা ভালবাসার খেলাতে অত 
ভাবতে নেই।
 শুধু চাওয়া পাওয়ার হিসেব কষলে 
নীলচে নীলকষ্ট গুলাে খুবলে খাবে প্রতিক্ষণ 
তার চেয়ে শােন মেয়ে- 
ঝেড়ে ঝুড়ে ফেলে দাও সংকোচ সব, 
হয়ে উঠো সাহসী- ভীষণ সাহসী, 
চেনা চেনা সুখগুলাে খুঁজে নাও।

বদ্ধতায় বেড়ে ওঠা প্রশ্ন 

             নাসরিন সুলতানা শিউলি, বগুড়া। 
নদীর কাছে যাওয়া হয় না আমার কখনাে 
মুগ্ধ আকাশের নিচে 
শান্তির নিঃশ্বাসে 
দাঁড়ানাে হয় নি কখনােই 
কাশফুল বাগান সবুজ উঠনেও 
স্পর্শ পড়ে নি আজ পর্যন্ত। 
এখন আমার খিদে হলুদ 
সর্ষে ফুল 
কে একটা পাপড়ি দিয়ে 
হিংস্রতা নেভাবে ? কে বুঝবে 
যন্ত্রণা, বাঁচাবে আমাকে? একটি 
সর্ষে ফুল কে আমাকে দেবে 
ভালােবাসা ও প্রেম! 
বিধাতা, কেন মনে ডানা লাগিয়ে 
পায়ে শিকল পড়িয়ে রেখেছে, আমার?


স্পর্শেই খুঁজে নিও 

        -এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন 
সহস্র ইচ্ছে থাকলেও তুমি নেই 
যদি পারতে বুকে জড়াতে 
এক হতে পারি নি তাতে কি ? 
অন্যের ছোঁয়াতেই খুঁজে নিও আমাকে 
আমিতাে আদ্ধাতিক জগতেই স্বর্গ রচি।।

স্পষ্ট

                -সাতানব্বই সাজু
সরুলতারা একতারার তার হলাে 
একথা মানবাে; দ্বিধাহীন। 
সেলিম মিস্ত্রীর হাতে গড়া 
আধখানা কাঁচি 
মিন্টুর হাতে এসে ধারালাে হবে, 
অথবা দখলে আসবে 
বেদখলে থাকা অর্ধ ইরাক; 
এ কথা কি করে মানি ? 
-বসে বাংলাদেশে।

ভিকটিম

I গতরাতে এক লাশ এসেছে। 
লাশ কাটা ঘরে। ভিকটিম। 
কলেজ যাবার পথে পাড়ার মাস্তানরা 
তুলে নিয়ে যায়। তিনদিন উপর্যুপরি ধর্ষণ 
ছােপ ছােপ রক্ত ওড়না কামিজে 
চোখ দু'টো আধবােজা। যেন প্রচণ্ড ঘৃণা 
এই পৃথিবীর উপর। 
মানুষ নামক কিছু নরপিশাচদের মুখে 
শেষ থুথুর বৃষ্টি ছিটিয়ে 
পড়ে আছে নিথর হয়ে।
 ফিরে যেতে পারে নি সে বাবার গৃহে 
মায়ের শাস্তি ছায়াঘন আঁচলের নীচে। 
কারণ- সর্বাঙ্গের কালিমা ধুয়ে মুছে 
সমাজ তাকে নেবে না ! 
পুলিশের অশ্লীল জেরা, চোখে লােভাতুর দৃষ্টি 
অবিশ্বাসের সুর তুলবে। 
পেপারিং- বড় বড় অক্ষরে ছাপা হবে 
ধর্ষিতার নাম ঠিকানা 
আত্মীয় স্বজন সব জেনে যাবে 
তাই কি আত্মাহুতি - লাশ কাটা ঘরে ?

বুলেটের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত 

-কাজী হানিফ 
কোন দিন হবে না শেষ 
বিজয়ের আনন্দ
 আমার মায়ের অশ্রুভেজা নয়ন 
সেতাে স্বাধীনতার মহা সাগর।

 কোন দিন বন্ধ হবে না 
আমি গাইতে থাকবাে। 
বিজয়ের গান
 সেতাে হবে না স্নান কখােনো। 
 
আমার তাজা তাজা প্রাণ গুলাে। 
ঝরে গেল স্বাধীনতা যুদ্ধে 
তবুও আমি বজ্র কঠিন 
মুক্ত করেছি স্বাধীন বাংলাদেশ।

 শরীরের রক্তফোটা থাকতে 
পারেনাই কেহ আটকে রাখতে 
বােনের ভালবাসায় সুস্থ হয়ে। 
আমি আবার গিয়েছি যুদ্ধে। 
 
বাবার শাসনে ও আদরে। 
মায়ের স্নেহে বেড়ে ওঠা দেহ, 
বুলেটের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত
 শহীদ হয়েছে আমার ভাই। 

এখন যুদ্ধ শুধু দেশটাকে গড়বার 
এস এসা হে ভাই হাতে হাত ধরে 
নিজকে শুধরাই আর প্রমাণ করি। 
বাঙালি জাতি আমরাই শ্রেষ্ঠ।

হৃদয়ে জাগে যে সব প্রশ্ন। 

-নিরআরজুমান লাভলী, গাইবান্ধা। 
কিন্তু কি বিষে এই বহু কাঙ্খিত বিজয় 
আজ রেখে গেল সে সন্তান, কুমারী মাতার গর্ভে 
কি হবে তার পরিচয়? 
ধর্ষিতা রমনী কি ফিরে পাবে সংসার? 
যে মেয়েটির প্রেমিক এলাে না ফিরে 
কি হবে তার? 
দিন তারিখ এমন কি গায়ে হলুদও হলাে
 এমন সময় এলাে দৃঢ়চেতা কনের বর যে চলে গেল! 
মুক্তি যােদ্ধা হয়েও বাঁচাতে পারল না রাজাকার পিতাকে 
বাঁচাতে চায়ও নি কিন্তু কি বলে বুঝাবে। 
সে মাকে? 
বিয়ের হলুদ এখনও গায়ে 
সবে সিঁদুর পরেছে গত রাতে
 হায়, নব বধু ! দুলহার বেশেই চলে 
গেল স্বামী প্রাতে, 
ছােট্ট শিশু অনাহারে যুদ্ধে মরেছে পিতা 
বলে রাক্ষসী ভবেতে 
কি বলবে শোকে মুহ্যমাত ? 
কেরানী পিতার একটি মাত্র ছেলে। 
ভাবছে এবার বিশ্রামের পালা। 
ছেলে নিবে সংসারের ভার- 
এমন সময় সাংগ হল যে ভব লিলা। 
মুক্তি যােদ্ধার বিধবা স্ত্রী নড়ে ওঠে খিল 
রাতের বেলা। 
কি করে সইবাে বৈভব্য 
সমাজপতি তারে নিয়ে করলে খেলা?
 কোথায় যে স্বাধীনতা কেউ কি চেয়েছিল 
এমনতর বিজয়- 
৩০ লক্ষ প্রাণ কি চেয়েছিল এই বিজয়ের অভিনয়?

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.