আপনার সন্তানকে বাঁচান এখনই !
আপনার সন্তানকে বাঁচান এখনই !
মেয়েটা মোবাইল নিতে চায়, কি যে করি ভেবে পাচ্ছি না। মোবাইল
না কি এখন স্টেটাস বাড়িয়ে দেয়। এই ডিজিটাল যুগে হাতে মোবাইল নেই, ভাবতেই কেমন লাগে।
অনেকে বলে গাঁইয়ে মেয়ে। আজ বিকেলে এ সমস্ত এক গাদা কথা আমাকে শুনিয়ে গেল মেয়ে প্রভা।
প্রভা এবার ক্লাস এইটে। যাগ্গে কাল একটা মোবাইল নিয়ে আসবো অফিস থেকে ফেরার পথে।
ফোন
পেয়ে প্রভা মহা খুশি। জড়িয়ে ধরে দু গালে চুমু খেয়ে বলল ইউ আর এ গ্রেট পাপা। মেয়ে খুশি
তো আমিও খুশি।
নতুন
মোবাইল। কল, মিসকল, বিভিন্ন বন্ধুদের কাছে নম্বর জানিয়ে দেওয়া, প্রথম প্রথম এটাই স্বাভাবিক।
১৫ দিনের মাথায় জুটে গেল এক মোবাইল বন্ধু, নাম রিগান। ধনির দুলাল সে। একমাস পরপর বাইক
চেঞ্জ করে। কখনো এ্যপাচি, কখনো পালসার, কখনো হাং। আবার বাজারে নতুন কোন মডেল আসলেই
তার মাথা খারাপ হয়ে যায়, দুই উরুর চিপায় না ফেলে সে ক্ষান্ত হবে না।
নতুন
নতুন বাইকের পিছনে বসতে বেশ ভালো লাগে প্রভার। হঠাৎ রিগান তার বাড়িতে নিয়ে যায় প্রভাকে।
মিষ্টি কথায় ভুলে যায় প্রভা। রিগানের বাবা মা ব্যবসার কাজে মাঝে মাঝে ঢাকায় যায়, আজও
তাই। বিয়ে করবই, তবে ভালোবাসা প্রকাশ করতে আপত্তি কোথায়? বলে রিগান।
সুনশান
পরিবেশ, পিঁপড়ার হেটে চলারও কোন শব্দ নেই, প্রভার মুখ থেকে কোনো কথা বের হয় না, বিষাক্ত
চোখ দু’জন দু’জনের দিকে তাকায়। তারপর গভীর চুম্বন এঁকে দেয় প্রভার ঠোঁটে। দু’জন ভীষণ
উত্তপ্ত। জালামুখ বিস্ফরিত হলো। সিক্ত হলো দু’জন। চুইয়ে চুইয়ে নিঃশেষ
হতে লাগলো তারা। সে দিন থেকেই তাদের লিভ টুগেদার শুরু। কিছুদিন পরপর বাইক চেঞ্জ করার
মত প্রভাকেও চেঞ্জ করল রিগান।
এ যুগে
এসব প্রেমিক প্রেমিকা চেঞ্জ করাকরি খুব একটা ব্যাপার না। প্রভাও গুডবাই জানালো রিগান
কে। তার কিছু দিন পর ফেসবুকে পরিচয় প্রভার জীবনে আসে সালমান নামের একটি ছেলের। কালো
ভক্সি গাড়ি নিয়ে আসে সে প্রভার সাথে দেখা করার জন্য। ভক্সির ভিতর থেকে সব বাহিরে দেখা
গেলেও বাহির থেকে ভিতরে দেখার কোন উপায় নেই। একান্নবরতি পরিবার সালমানের। তাই বাড়িতে
নিয়ে যেতে পারে না প্রভাকে। নিরজন এলাকায় রাস্তার পাশে দামি গাড়িটি থামিয়ে শরীর মোহনায়
মিলিত হয় দু’জন। এভাবেই চলে কয়েক মাস। এখন সেই ভক্সি গাড়িতে প্রভা উঠে না, উঠে অন্য
মেয়ে।
কিছুদিন
বন্ধ থাকে এই মোবাইল বন্ধু। হঠাৎ একদিন মোবাইল বেজে উঠে প্রভার। রিসিভ করতে গিয়ে দেখে
কোন নম্বর স্কৃনে উঠেনি, লেখা উঠেছে প্রাইভেট কল। নিশ্চয় দেশের বাহিরে থেকে। প্রভার
মিষ্টি কণ্ঠে আমেরিকান প্রবাশি জোসেফ নামের ছেলেটি ব্যাকুল হয়ে যায়। প্রতিদিন কথা হয়
প্রভার সাথে গভীর রাতে। দুই মাস পর জোসেফ দেশে আসে। তিন মাস দেশে থেকে শরীরের তৃষ্ণা
মিটিয়ে সব সম্পরক ছ্ন্নি করে জোসেফ আবার উড়াল দেয় আমেরিকায়।
হাস্যউজ্জল
মেয়েটি আমার আর হাসে না। কেমন যেন মন মরা হয়ে থাকে সব সময়। দুই চার দিন পর পর অসুস্থ
হয়ে পরে। একদিন ডাক্তার রক্ত পরিক্ষা করে খুব কস্টে বলল- আপনার মেয়ের এইস, আই, ভি
(এইডস্) হয়েছে।
শোনার
সাথে সাথে আমার হাত পা সব ঠান্ডা হয়ে যায়। ওই সময়ের কস্টের পরিমান আপনাদের কাউকে বুঝাতে
পারবো না। আমি কান্নায় ভেঙ্গে পরি। মেয়ে আমার স্বাবালিকা হতে এখনোও ৪ বছর বাকি।
আমি
বাবা হয়ে সকল বাবাদের হাত জোর করে অনুরোধ করে বলছি। আমার মতো একটি ভুল করে সারা জীবন
কাঁদবেন না প্লিজ……..! সংসারের সমস্ত সুখ শেষ করে দিবেন না। ১৮ বছরের নিচে কখনই সন্তানদের
মোবাইল কিনে দিবেন না। যদিও পরিবেশ পরিস্থিতিতে দিতেও হয় তাহলে রাত ৯ টা থেকে সকাল
৯ টা পরযন্ত কোনদিনই দিবেন না।
এই গল্পটি যদি আপনার ভাল লেগে থাকে বা মনে একটুও দাগ কেটে থাকে তাহলে সবার
উপকারের স্বারথে সেয়ার করতে ভুলবেন না প্লিজ। যে কোন অভিমত, বা সমালোচনা করার থাকলে
কমেন্ট করে জানাবেন অবশ্যই। ধন্যবাদ সবাইকে ।
রচনা- এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন
কোন মন্তব্য নেই