Header Ads

লাভ (উপন্যস) পর্ব-২

লাভ
                     এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন
 (উপন্যাস) পর্ব- ২
          বাসটি বগুড়া চারমাথা বাস টার্মিনালে থামলাে। হৃদয় কোনদিন শহরে আসেনি। আজই সে প্রথম শহরে এলাে। বাস থেকে নেমে দেখলাে কত গাড়ি, মানুষের ভিড়ে গাড়ির হর্ণ বাজছে মনে হয় কানের পর্দা ফেটে যাবে। সে শহরের কিছুই চিনে না। হৃদয়ের চাচাতো ভাই বগুড়া শহরে কাজ করে । সে হৃদয়কে চিঠি লিখে বলেছে বগুড়া বাস টার্মিনালে নেমে যেকোন রিক্সাওয়ালাকে আযিযুল হক কলেজের পুরাতন ভবন বললেই নিয়ে যাবে । আর আযিযুল হক কলেজের পূর্ব পাশে থাকার জন্য অনেক মেস আছে। কোন চিন্তা করতে হবে না। সে কথা চিন্তা করে হৃদয় এক রিক্সাওয়ালাকে বললাে, এই রিক্সা আযিযুল হক কলেজ পুরাতন ভবনে যাবে? 

 -রিক্সাওয়ালা বললাে, যাবাে। 
-হৃদয় বললাে, ভাড়া কত?
-রিক্সাওয়ালা বললাে, ২০ টাকা নিবাে। 
-হৃদয় চালাকি করে বললাে ১০ টাকা দিব যাও যদি চল না হলে অন্য রিক্সা ডাকলাম। 
-রিক্সাওয়ালা বললাে, যাবনা, ১০ টাকা দিয়ে কেউ যাবে না। 
হৃদয় অন্য রিক্সা ডাকতেই- ঐ রিক্সাওয়ালা বললাে, আসেন নিয়ে যাব। হৃদয় রিক্সায় চড়ে যেতে যেতে ভাবলাে এখন বেলা ১২টা কলেজ এখন খােলা থাকতে পারে । কলেজ যদি খােলা থাকে তাহলে ভর্তি হয়েই থাকার ব্যবস্থা করবাে। ভাবতে ভাবতে রিক্সাওয়ালা একসময় আযিযুল হক কলেজের সামনে এসে বললাে, এই তাে কলেজ, নামেন। 
রিক্সা থেকেই আযিযুল হক কলেজের দরজার উপর কলেজের নাম দেখে বুঝতে পারল ঠিক আছে। হৃদয় নেমে ১০ টাকার একটা নােট দিয়ে রিক্সাওলাকে ধন্যবাদ দিয়ে কলেজের ভিতর চলে গেলাে। হৃদয় অফিসে না গিয়ে আগে নােটিশ বাের্ডের দিকে গেল। সেখানে দেখতে পেলাে যে ভর্তি পরীক্ষা আগামী মাসের ২ তারিখ রােজ সােমবার । হৃদয় ভাবল ২ তারিখ আসতে এখনাে ৫ দিন বাকি। অতএব এখন থাকার জন্য মেস খোজ করি । চাচাতাে ভাই বলেছিল কলেজের পূর্বপার্শ্বে মেস আছে। 

সেই মােতাবেক কলেজের পূর্বপাশ্বে যেতেই রাস্তার ডান পার্শ্বে সাইনবাের্ডে লেখা আছে “সূর্যমুখি ছাত্রাবাস।” 
সূর্যামুখি ছাত্রাবাসেই তার থাকার ব্যবস্থা হয়ে গেলাে। 
রাতে হৃদয়ের ঘুম আসছে না। শুধু বাবা মার কথা মনে পড়ছে। সে তার জীবনে কোন দিন বাবা মাকে ছাড়া অন্য কোথাও থাকেনি আজই তার প্রথম । বাবা মাকে ছেড়ে থাকতেই হৃদয়ের খুব ভয় করছে। কেন যে ভয় করছে সে নিজেই জানে না। তবুও ভয় করছে। মাঝে মাঝে সে ভাবে আমি বাবা মাকে ছাড়া থাকতে পারব না। কাল সকালেই চলে যাব। আবার ভাবে, না বাবা মা আমাকে অনেক আশা করে পাঠিয়েছে, তাদের আশা আমাকে পূরণ করতেই হবে। অনেক কথা ভেবে হৃদয় বুকে পাথর বাধল। সে প্রতিজ্ঞা করল বাড়ি ফিরে যাবে না। আমাকে লেখাপড়া শিখে অনেক বড় হতে হবে। ভাবতে ভাবতে হৃদয় ঘুমিয়ে পড়ল। 
হৃদয়ের রুমে আরো দুই জন ছেলে থাকে তারা খুব মেধাবী ছাত্র । হৃদয় তাদের রুমে আসাতে তারা ভাবল যদি ছেলেটি খারাপ হয় এখানে রাখবাে না । তারা একে অপর বলাবলি করল । ৩/৪ দিন হৃদয়ের ব্যবহার, চলাফেরা দেখবে। ঘরে দু’জন ছেলের মধ্যে এক জনের নাম বিপু আর একজনের নাম বাবু- বিপু বাবুকে বললাে ছেলেটি দেখতে খুব সুন্দর লম্বা-চওড়া সুন্দর শারীরিক গঠন, ঠিক সিনেমার নায়ক রিয়াজের মতাে। দেখে মনে হয় ভদ্র পরিবারের আদর্শ ছেলে। 
-বাবু বললাে, মানুষে মুখ দেখেতো আর সব বুঝা যায় না। 
-বিপু বললাে, তুই যা বলেছিস ঠিক, তবে ২/৪ দিন দেখলেই বুঝতে পারবাে। 
-বাবু বললাে, রাত বারটা বেজে গেছে যা তাের ছিটে গিয়ে ঘুমে পড়। 
বিপু কথা না বাড়িয়ে বাথরুম সেরে ঘুমিয়ে পড়ল। 

ছাত্রাবাসের পার্শ্বেই মসজিদ ফজরের আজান দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হৃদয় ঘুম থেকে উঠে বিপু ও বাবুকে ডাক দিল। উঠুন, চলুন মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে আসি। 

বিপু ও বাবু ঘুম থেকে উঠার সঙ্গে সঙ্গে তাদের সমস্ত ভুল ভেঙ্গে গেলাে । হৃদয় যে ভাল ছেলে তাদের বুঝতে আর বাকি রইলাে না। বিপু ও বাবু দু’জনেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে। তারা সকলে উঠে দাঁত ব্রাশ করে অযু সেরে নামাজ পরে রুমে এসে হৃদয় বিপু ও বাবুকে লক্ষ করে বললাে, আপনাদের নাম? 

বাবু বললাে, আমার নাম মােঃ জেলহজ হােসেন (বাবু) 

-বিপু বললাে, আমি বিপ্লব হােসেন (বিপু) 

-বিপু বললাে, আপনার পরিচয়? 

-হৃদয় বললাে, আমি মােঃ মহাতাব উদ্দিন (হৃদয়) বাড়ি পিরব, আযিযুল হক কলেজে ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি হতে এসেছি। 

বাবু বললাে আমরাও এখানে ভর্তি হতে এসেছি। যাক ভালই হল এক সঙ্গে আমরা থাকবাে। 

হৃদয়, বিপু, বাৰু তিনজনই ভর্তি হয়ে একই সঙ্গে নিয়মিত ক্লাস করে। মিলেমিশে থাকে। এক সঙ্গে, যেন একই থালায় ভাত খায়। একজন অসুস্থ হয়ে পড়লে মনে হয় সকলেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। কেউ কাউকে ছাড়া থাকতে পারে না। তারা মনে করে একই প্রাণ তিনটি দেহ। 

 বিপুর বাবা গরীব, হৃদয়ের বাবার মতাে। বাবু হৃদয় ও বিপুর চেয়ে ধনী। বাবুর বাবা সরকারী হাইস্কুলের আদর্শ শিক্ষক। 

ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, কথায় আছে রাখে আল্লাহ মারে কে আবার মারে আল্লাহ রাখে কে। বিপুৱ বাবা একদিন বিপুর ছােট্ট বােনের জন্য জামা কিনতে যায়। বিপুর বাবা অনেক কষ্টে টাকা জুগিয়ে বিপুর ছােট্ট বােনের জন্য জামা কিনে খুব আনন্দে বাসে চড়ে আসছে। হঠাৎ বাসের চাকা ফেটে গিয়ে বাসটি খালের মধ্যে পড়ে যায়। এতে শুধুমাত্র বিপুর বাবাসহ আর দুজন মারা যায় । 

দুদিন পর বিপুর মার লিখা একখানা চিঠি আসে। চিঠিতে বিপুর মা লিখেছে, বাবা তুই যত তাড়াতাড়ি পারিস বাড়ি চলে আয়” এর চেয়ে বেশী কিছু বিপুর মা লিখেনি। চিঠি পাবার সঙ্গে সঙ্গে বিপু তার বন্ধুদের না বলে চলে যায় । সে যে চলে গেল আর ফিরে আসল না। হৃদয় ও বাবু মনে করলাে দু'দিন পর আসবে। কিন্তু ১৫ দিন হয়ে গেল ফিরে এলােনা। হৃদয় চিঠি লিখলাে, ১০ দিন পর বিপুর উত্তর এলাে। হৃদয় বাবুর চিঠি পেয়ে খুশিতে বিভাের । হৃদয় পড়ছে। আর বাবু শুনছে। বিপু লিখেছে। 

প্রিয় বন্ধু হৃদয় ও বাবু, 

পত্রের প্রথমে আমার কষ্ট মাখা ভালবাসা গ্রহণ করিও। আশা করি আল্লাহর রহমতে তােমরা, ভাল আছে। আমি কেমন আছি জানি না। 

পরসংবাদ,

হে আমার প্রাণের বন্ধুরা আমার আশা ছিল তােমাদের সাথে এক সঙ্গে থেকে লেখা পড়া শেষ করে চাকরি করে বাবা মাকে সুখে শান্তিতে রাখবাে। কিন্তু হলাে? হলাে না তােমাদের সঙ্গে থাকা, হলাে না বাবা মাকে কষ্ট থেকে মুক্তি দেওয়া। আমার বাবা আমাদের ছেড়ে চলে গেছে অনেক দূরে। যেখানে গেছে আর ফিরে আসবে না কোন দিন না। বন্ধুরা আমি আর কিছু লিখতে পারছি না। আমার হাত অবশ হয়ে আসছে। সব শেষে আমার একটাই অনুরােধ পারলে এই হতভাগা বিপুর জন্য দোয়া করাে। তােমাদের বাবা মাকে আমার শ্রদ্ধাপূর্ণ সালাম জানাই ও। পারলে এই দূগা পিতার কবরকে দেখে যেও। খােদা হাফিজ। 

ইতি
তোমার হতভাগ্য বন্ধু, 
বিপু।

হৃদয়, বাবু চিঠি পরে নিজেদের আটকে রাখতে পারল না। তাদের চোখ দিয়ে ঝড় ঝর করে পানি পড়তে লাগলাে। তাদের মন ৪/৫ দিন ধরে খারাপ। চিন্তায় তারা ঠিক মতো খায় না। 
তারা ৫/৭ দিন হলাে কলেজ যায় না। আট দিন হয়ে গেল আজ শনিবার। 

-সকালে খাওয়া সেরে হৃদয় বাবুকে বললাে, মন খারাপ করে লাভ নেই চল আজকে কলেজ যাই ।

 -বাবু বললাে, আজ কেউ যেতে চাচ্ছে না তবে তুই যখন বলছিস যাই। 

দু’জন সেজে গুজে কলেজের উদ্দেশ্যে বের হলাে। দু’জনেরই মন খারাপ। বাবু ভাবছে আমরা তিন বন্ধু এক সঙ্গে কলেজে যেতাম আজ একজন নেই। এগুলাে ভাবতেই বাবুর চোখ দিয়ে ঝর ঝর করে পানি পড়তে লাগলাে । হৃদয় দেখে বললাে কি ব্যাপার তুই কাঁদছিস্ কেন। বুঝতে পেরেছি বিপুর কথা মনে পড়েছে। কাঁদিসনে, মানুষ দেখলে খারাপ ভাববে। তখন বাবু পকেট থেকে রুমাল বের করে চোখ মুছলাে। 

এভাবে ধিরে ধিরে দু’জন ঠিক হয়ে গেল কিন্তু মনের মধ্যে সেই যে দাগ পড়ে গেল আর মিশলাে না। প্রায় মনে পড়ে বিপুর কথা, যখন মনে পড়ে তখনই দু'জনার মনটা খারাপ হয়ে যায় । সে দিনটি আর ভাল লাগে না। 

এভাবে কয়েক মাস চলে গেল । হৃদয়, বাবু এখন ইন্টার ২য় বর্ষের ছাত্র। হৃদয় বাবুকে বললাে, 

-বাবু একটা টিউসনি খোজ তাে পাস কিনা, পেলে পড়াবাে। 

-বাবু বললাে কোন কোন ক্লাস পর্যন্ত পড়াতে পারবি? 

-হৃদয় বললাে, নাইন, টেন পর্যন্ত পড়াতে পারবাে। 

-বাবু বললাে, তাহলে একটা পেয়েছি। 

-হৃদয় বললাে, কোথায়? 

-বাবু বললাে কয়েক দিন আগে এক ভদ্রলােক আমাকে বলেছিল এই কলেজের কোন ভাল ছাত্র পেলে আমাকে বলাে, আমার ছেলেকে প্রাইভেট পড়ানাের জন্য, যদি সে পড়ায় । 

-হৃদয় বললাে, তাহলে ভালই হলাে টিউসনি পেয়ে গেলাম। 

-হৃদয় বাবুকে আবার বললাে, লােকগুলাে কেমন রে? 

-বাবু বললাে, তারা খুব ধনী বগুড়ার, একজন বিরাট ব্যবসায়ী। তার এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে ৭ম শ্রেণীতে পরে, তাকেই পড়াতে হবে আর মেয়ে এবার ইন্টার ১ম বর্ষ, মেয়েটা দেখতে খুব সুন্দর তাের সঙ্গে খুব মানাবে। দেখলেই ভালবাসার জন্য মন দিতে ইচ্ছে করবে। আমি তােকে ঠিকানা দিচ্ছি কালই তাদের বাসায় যাবি।

বাবু এ সমস্ত কথা বলেও দেখলাে, হৃদয়ের মন খারাপ। 

-তখন বাবু বললাে, তাের মন খারাপ কেন? পাড়াবি না? 

-হৃদয় বললাে, তাের কথা শুনে মনটা খারাপ হয়ে গেল। 

-বাবু বললাে, কেনাে? 

-হৃদয় বললাে, তােকে কলেজে কতবার বলেছি মেয়েদের লােভ আমাকে দেখাবি না, আমি পছন্দ করি না। 

-বাবু বললাে, সরি হৃদয়, আমার একদম মনে ছিল না, আমাকে তুই ক্ষমা করে দে। 

-হৃদয় বললাে, তাই বলে তুই মন খারাপ করিস না, তুই মন খারাপ করলে, আমাকেই কেমন যেন খারাপ লাগে। 

-বাবু সঙ্গে সঙ্গে বললাে, কই নাতাে, আমি একটুও মন খারাপ করিনি। ভুল হলে সবাই ক্ষমা চায়, তাই আমিও চেয়েছি বুঝলি ।

 -হৃদয় বললাে, বুঝেছি সব বুঝেছি, এখন খাওয়া দাওয়া করে একটু বিশ্রাম নে

পরের দিন কলেজ বন্ধ । তাই হৃদয় ঠিকানা অনুযায়ী সেই বাড়িতে গেলাে । বাড়িতে গিয়ে কলিং বেল টিপতেই একজন ১৭/১৮ বয়সের মেয়ে বেরিয়ে এসে দরজা খুলে দিলাে 

-হৃদয় ভাবলাে, বাবু যা বলেছিল ঠিক সেই মেয়েটি। দেখতে খুব সুন্দরী। হৃদয় আর কিছু ভাবার সুযােগ পেল না। মেয়েটি তাকে ড্রইং রুমে বসতে বললাে। সে নরম সােফার উপর বসলাে । হৃদয় চিন্তা করছে আর মনে মনে। বলছে এত বড় বাড়ি আর এতাে সুন্দর করে সাজিয়েছে শুধু সারাক্ষণ দেখতে ইচ্ছে করছে। কিছুক্ষণ পরে পঞ্চাশ ঊর্ধ্ব এক ভদ্র লােক আমার কাছে। আসতেই আমি সালাম দিলাম। তিনি আমার সালামের উত্তর দিয়ে আমার সামনে বসলেন। 

 -তিনি বললেন, তােমার নাম কি? 

-হৃদয় বললাে, আমি মােঃ মহাতাব উদ্দিন বিন আফতাব উদ্দিন, হৃদয়, সবাই আমাকে হৃদয় বলেই ডাকে। আমি ইন্টারমেডিয়েট পড়ি । বাড়ি শিবগঞ্জ থানার পালিকান্দা গ্রামে। এখানে ছাত্রাবাসে থেকে লেখাপড়া করি । আমার বাবা একজন কৃষক মা গৃহিনী । 

-ভদ্রলােক বললাে, তােমাকে শুধু নাম জিজ্ঞাসা করলাম তুমি সব বললে কেন? 

-হৃদয় বললাে, আমি জানি আপনি পর পর এই সমস্ত প্রশ্ন আমাকে করবেন, তাই বার বার বলার আগেই সব বলে ফেললাম। তাছাড়াও একজন আর একজনের সম্পর্কে জানতে চাইলে এই সমস্ত কথাই সাধারণত জানতে চায় ।
-লােকটি হৃদয়ের ব্যবহারে খুশি হয়ে বললেন, তােমাকে আমার পছন্দ হয়েছে। তুমি কাল থেকেই আমার ছেলেকে পড়াবে। স্কুলের সময় ছাড়া যখন ইজা এসে পড়াবে কোন অসুবিধা নেই। মাসিক বেতন তােমার দুই হাজার টাকা। প্রতিদিন মাইক্রোবাস তােমাকে নিয়ে আসবে আবার পড়া শেষে রেখে আসবে। হৃদয় শুনে খুশি হলাে কিছু বুঝতে দিল না। 

-২য় বললাে, আপনার ছেলে কোথায়?

 -ভদ্রলােক বললাে, তুমি একটু বসাে আমি তাকে পাঠিয়ে দিচ্ছি। দশ মিনিট পর ছেলেটি এসে হৃদয়কে দেখে সালাম দিল 

হৃদয় ওয়ালাইকুম আস্সালাম বলে ছেলেকে পাশে বসালেন। 

-হৃদয় বললাে, তােমার নাম কি? 

-ছেলেটি বললাে, আমার নাম জাহিদুল। 

-হৃদয় বললাে, মুসলমান কোন মানুষের নামের প্রথমে মােঃ বলতে হয়। 

-হৃদয় বললাে, কোন ক্লাসে পড়? 

-জাহিদ বললাে, ব্যাটালিয়ন স্কুলে, এবার সপ্তম শ্রেণীতে উঠলাম । 

-হৃদয় বললাে, এবার তােমার রােল কত হয়েছে।

 -জাহিদ বললাে, চার । 

-হৃদয় বললাে, খুব সুন্দর। তােমার রােল চার হয়েছে শুনে আমি খুব খুশি হলাম। তােমাকে কখন, কবে পড়াবাে বল? 

-জাহিদ বললাে, আপনার যখন সুবিধা পড়াবেন। 

-হৃদয় একটু রসিকতা করে বললাে, আমি যদি শেষ রাতে পড়াই তাহলে। 

-জাহিদ বললাে, আপনি যদি পড়াতে পারেন তাহলে পড়বাে। 

-হৃদয় খুশি হয়ে থেংক ইউ ভেরী মাচ, তােমার কথা শুনে আমি খুব খুশি 

-হৃদয় যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়িয়ে বললো, কাল বিকেল তিনটার দিকে আসবাে তুমি রেডি থাকবে। 

-জাহিদ বললাে, গাড়ি নিয়ে কাল থেকে আপনাকে নিয়ে আসবে। 

-হৃদয় বললাে, গাড়ির প্রয়ােজন হবে না আমি নিজেই আসতে পারবাে। এই বলে হৃদয় চলে গেল। 

-হৃদয় চলে গেলে জাহিদের বােন মিস্ চায়না জাহিদের ঘরে গিয়ে বললাে, নতুন স্যারের সঙ্গে কথা বলে কেমন বুঝলি? 

-জাহিদ বললাে, এই স্যারকে আমার খুব পছন্দ, রসিকতাও করে খুব সুন্দর, তােমাদের কলেজে পড়ে, এর আগে কলেজে দেখনি? 

-চায়না বললাে, দেখেছি হয়তাে বা মনে নেই।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.