Header Ads

রেহেনা ম্যানশন

  রেহেনা ম্যানশন 

                                           এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন

          রিপন ছােট বেলা থেকেই বাহিরে লেখাপড়া করে । কখনাে চট্টগ্রাম , কখনাে রাজশাহী , কখনাে সিলেট , কখনাে আবার ঢাকা । H.S.C পাশ করতে সে ৫/৬ টি জেলায় লেখাপড়া করেছে । আসল বাড়ি রংপুর । তিন । মাস পরপর বাড়ি আসে , বাবা মা এবং আর একজনকে দেখার জন্য । মিতা তার নাম । প্রেম ভালবাসা কি ? তা বুঝবার আগেই তার সাথে সম্পর্ক হয় । মান অভিমান , রাগ , ঝগড়া সব কিছুর মাঝেও তাদের সম্পর্ক টিকে আছে । অনেক দিন । কেউ কাউকে ভুলতে পারেনা । মিতা দেখতে বেশ । দাঁতের উপরে দাঁত , হাঁসলে দাঁতের জন্য দেখতে ভাল লাগে । গালেও টোল পরে ছােট্ট । কথা গুলােও কোয়া কোয়া , শুনতে ইচ্ছে করে । শরীরটাও বুদলুম বুদলুম , সম্পর্কও গভীর । রিপনের বন্ধুরা বলে , সবার প্রেম নষ্ট হলেও এদের প্রেম একটু আলাদা , মনে হয় সারাজীবন একই খাটে থাকবে তারা ।



 রিপন বাড়ি আসলে তাদের দু'জনের দেখা হয় সপ্তাহে দুই তিন দিন । দু’জনের বাড়ি পাশাপাশি । কখনাে পার্কে , কখনাে কলেজে , কখনাে আবার বান্ধবীর বাড়িতে ডেটিং হয় । তবে বান্ধবীর বাড়িতে ডেটিং করতে তাদের খুব ভাল লাগে । একা একা ঘরে বসে গল্প করা যায় । একদিন । বান্ধবীর বাড়িতে গল্প করতে করতে তারা বেশী আবেগপ্রবন হয়ে পরে কিন্তু মিতা রিপনকে সাবধান করে দেয় , এ সমস্ত কাজ আমরা বিয়ের আগে কখনাে করবাে না । রিপন নিজেকে ঠিক করে নেয় । 

          রাত ১২ টা । রিপন জানালার পাশে বসে বসে ভাবে সত্যিই আমি । ভাগ্যবান । ভালাে চরিত্রের মেয়ে পেয়েছি আমি , এ রকম উত্তেজনা পূর্ন সময়ও সে নিজেকে ঠিক রেখেছে ভাবাই যায়না । সত্যিই পবিত্র ফুলের মত একটি মেয়ে । তারপর থেকে রিপন মিতাকে যথেষ্ট সম্মান করে । খারাপ । চিন্তায় আর সুযােগ খোজেনা । 

          আস্তে আস্তে আরাে গভীর হয় ভালবাসা । রিপন মাঝে মাঝে রংপুরে এসে দেখা করে যায় মিতার সাথে , কিন্তু বাড়ি আসেনা । এক পলক দেখার জন্য রিপন সেই চট্টগ্রাম থেকে আসে । মিতা নিষেধ করে কিন্তু মনতাে মানেনা । এক পলক দেখলেই সমস্ত জার্নির কষ্ট ভুলে যায় রিপন । এখন । শুধু সময়ের বেপার , লেখাপড়া শেষ হলেই তারা বিয়ে করবে , বেশী দিন আর নেই লেখাপড়া শেষ হতে।অনেক দিন হয়ে গেছে তাদের সম্পর্ক , প্রায় ১১ বছর , আর মাত্র দুই তিন বছর তাহলেই অপেক্ষার পালা শেষ । মিতার মন অত্যন্ত নরম , রিপন একটু রাগ করলেই মিতার চোখ দিয়ে গড়গড় করে জল পড়ে । রিপন মিতার চোখের জল সহ্য করতে পারাে । সংগে সংগে । রিপনের রাগ ঠান্ডা হয়ে যায় । উল্টো রাগের জন্য ক্ষমা চেয়ে নেয় মিতার কাছে । 

          এবার বাড়ি আসতে রিপনে একটু দেরি হয়েছে , প্রায় ৬ মাস , পরীক্ষা থাকার কারনে আসতে পাননি । পরের দিন সকালে শিপন কলেজে যাচ্ছে , মিতার সঙ্গে দেখা করার জন্য । পথে অনেক পুড়োনো এক বন্ধুর সাথে দেখা , হবেইতাে ৭/৮ বছর পর । এতো দিন পর দেখা হুট করে তাে আর ছেড়ে যাওয়া যায় না । বন্ধুর নাম তুহিন । গল্প করতে করতে হােটেলে বসলাে দুজন । 

রিপন  ঃ- কি করিস এখন ? কই থকিস । 

তুহিন  ঃ- কেন রংপুরেই আছি , চাকরি করছি । 

রিপন ঃ - রংপুরেই আছিস কিন্তু দেখা হয়নি এতাে দিন ! 

তুহিন  ঃ- সারাদিন ব্যস্ত , তুইওতাে থাকিস না তাই দেখা হয়না । তা তুই  যাচ্ছিস কই ? 

রিপনঃ- কলেজে , অনেক দিন যাবত প্রেমিকাকে দেখিনা । 

তুহিন  ঃ- নাম কি তার ? 

রিপনঃ- মিতা । 

তুহিন একটু অবাক হয়ে ঃ- কোন মিতা ? সফিক সাহেবের মেয়ে মিতা ! 

রিপন - তুই চিনলি কি করে ? তুহিন মানিব্যাগ থেকে ছবি বের করে বলে- দেখতাে এই মেয়ে কি না ? 

রিপন অবাক  ঃ- হ্যাঁ ... ওর ছবি তাের কাছে কেন ? 

তুহিন  ঃ- সেতাে রাসেল ভাইয়ের সঙ্গে প্রেম করে । আমি আর রাসেল ভাই একই রুমে থাকি । শুধু তাই না । 

রিপন  ঃ- তুই কোথায় থাকিস ? 

তুহিন  ঃ- এইতাে সামনে রেহেনা ম্যানশনের নিচতলার প্রথম রুমে । 

রিপন  ঃ - তুই কি সত্যি বলছিস ? কত দিন যাবত ।আমারতাে বিশ্বাসই হচ্ছেনা । 

তুহিন  ঃ- হবেই তাে দের বছর , শুধু তাইনা মিতা আসে সকাল ৯ টার সময় , আমি তাদের দু'জনকে ভিতরে রেখে দরজায় তালা দিয়ে অফিসে । যাই আবার বিকেল ৪ টায় এসে দরজা খুললে মিতা বেরিয়ে যায় রেহেনা ম্যানশন থেকে ।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.