Header Ads

মায়ের দোয়া- চাকু আর তরমুজের মত।


মায়ের দোয়া- চাকু আর তরমুজের মত

          মায়ের দোয়া এমন দোয়া, দোয়াটাও কবুল বদ দোয়াটাও কবুল যদি এমন হত শুধু দোয়াটা কবুল করে তাহলে কোন সমস্যা ছিল না দোয়া না করুক সমস্যা নাই কিন্তু বদ দোয়া কবুল হয়ে গেলে সমস্যা আছে এজন্য আমরা সব সময় তাদের সাথে ভাল আচরণ করবো



বাবা মার দৃষ্টান্ত তরমুজ আর ছুরির মত। বাবা মা ছুরি আর ছেলে মেয়ে তরমুজ, তরমুজ নিচে রেখে উপর থেকে ছুরি মারলে তরমুজ কেটে যায় আবার নিচে ছুরি রেখে উপর থেকে তরমুজ ফেললে তরমুজ কেটে যায়। উভয় অবস্থায় তরমুজের ক্ষতি হয় ছুরির কিছুই হয় না। এজন্য যত বড়ই আপনি আল্লাহর অলী হননা কেন মা বাবা বদ দোয়া দিলে কিন্তু সাথে সাথে লেগে যাবে

এর উপর একটি মজার গল্প শুনুন ভাল লাগবে।  বনী ইসরাইলের একজন আবেদ ছিল নাম জুরাইজ। বুখারী  শরীফের বর্ণনা- জুরাইজ সে একজন অনেক বড় আল্লাহর অলী ছিলেন, তাহাজ্জতের নামাজ পড়তেন নিয়মিত উনি থাকতেন পাহারের উপর, একদিন গভীর রাতে পাহাড়ের উপর তাহাজ্জতের নামাজ পড়ছেন। এমন সময় উনার মা উনাকে ডেকে বলছে জুরাইজ আমাকে এক গ্লাস পানি দাও। জুরাইজ মনে মনে ভাবে হায় হায় নামাজের মধ্যে দাড়ালাম এখনি মায়ের তৃস্না লাগলো কি করবোমায়ের ডাকে সাড়া দিবো, না নামাজ চালিয়ে যাব। সে ভাবে একটু পরে পানি খাওয়াবো আগে নামাজ টা পড়ি। কিছু সময় পড় তার মা আবার ডাক দিল হে জুরাইজ, জুরাইজ আবার বিপদে পরে যায় কি করব , আবার ভাবে নামাজটা শেষ করেই যাই

ভাবতে ভাবতে আবার তৃতীয়বার ডাক দেয় তিনবার ডাকার পরেও মায়ের ডাকে সাড়া দেয় নি, মায়ের মনের মধ্যে দুঃখ লেগেছে, দুইটা হাত তুলে ছেলের জন্য বদ দোয়া দিয়েছে, সাথে সাথে কবুল করেছে আল্লাহ পাক।  কে মুমিন, কে হাফেজ, কে আল্লাহর অলী এটা দেখার বিষয় না, মা দোয়া করলেও কবুল বদ দোয়া করলেও কবুল

মা বদ দোয়া করলেন হে আল্লাহ তিনবার ডাকলাম পানি খাওয়াল না। আমার মনে বড় দুঃখ লেগেছে হে আল্লাহ আমি বদ দোয়া দিলাম বেশ্যা নারীর ফেতনায় না ফেলে জুরাইজ কে মরণ দিওনা। কবুল করে নিল আল্লাহ। ঠিক তার তিনদিন পরে কেউ একজন তার দরজায় নক করতে শুরু করছে, তাহাজ্জতের নামাজ শেষ করে দরজা খুলে দেখে এক বেশ্যা নারী। ওই নারী বলে দেখো আমি কত সুন্দরী, অনন্যা, সুস্নৃগ্ধা প্রিয়ঙবদা, সুভাষীনি, সুকেষীনি কাক পখ্খিও জানবেনা এত রাতে কেউ দেখবে না তুমি আমার সাথে অপকর্ম কর। আল্লাহ অলী জুরাইজ বললেন খবরদার তুমি আমার কাছে আসবে না, আমি একজন কে ভয় পাই তিনি একমাত্র আল্লাহ। ওই বেশ্যা নারী সুবিধা না করতে পেরে ওই পাহাড় থেকে নেমে আসে। নেমে দেখে পাহাড়ের নিচে এক রাখাল শোয়া, রাখালকে ঘুম থেকে উঠিয়ে তার সাথে অপকরমে লিপ্ত হয়

আর এই বেভিচারের ফসল হিসেবে কিছু দিনের মধ্যে ওই নারীর পেটের ভিতর এক বাচ্চার আগমন হয়। দিন গড়িয়ে রাত আসে রাত গড়িয়ে মাস আসে মাস গড়িয়ে বছর আসে, তিন মাস যাওয়ার পর ওই নারীর পেটটা উচুঁ হয়ে উঠে। এবার এলাকার লোকেরা ধরেছে, তুইতো বিয়ে করিস নি পেটে বাচ্চা আসল কিভাবে ? তখন উত্তরে ওই নারী বলে এই বাচ্চার বাবা হচ্ছে ওই আল্লাহ অলী জুরাইজ। জুরাইজ আমার সংগে খারাপ কাজ করেছে গভীর রাতের আধারে, কেউ দেখে নি

তখন সবাই মিলে জুরাইজকে ধরল এবং বলল তুমি একজন ভন্ড। সাবাই ভাবল হায় হায় এতদিন ভাবতাম আল্লাহর অলী এখন দেখি ভন্ড। দিনের বেলা আল্লাহ আল্লাহ কর আর রাতের বেলা অপকর্ম! আজ তোমার ভন্ডামো ছুটাব। এই বলে সবাই মিলে মারতে শুরু করে। জুরাইজ বলে কিছুইতো বুঝলাম না কেন মারো?আমার কি অপরাধ? তুই এই নারীর সাথে অপকর্ম করেছিস আজ সে গর্ববতী। জুরাইজ বল্ল এই নারীকে আমি চিনিই না

তার কথা কেও বিশ্বাস করে না। সবাই শিদ্ধান্ত নিল তাকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হবে। জুরাইজ বলল ঠিক আছে তার আগে আমাকে দুই রাকাত নামাজ পড়ার সুযোগ দাও। সে নামাজের সময় বলল হে আল্লাহ তুমি আমাকে বাঁচাও ওই বাচ্চার জবান তুমি খুলে দাও নইলে আমি বাঁচব না

নামাজ শেষ করে জুরাইজ ওই মহিলাকে ডেকে বলে তোমার পেটের বাচ্চার বাবা কে ? মহিলাটি বলে আপনি।এবার জুরাইজ মহিলাটিকে আরো কাছে ডাকে এবং পেটের দিকে ইঙ্গিত দিয়ে ওই সন্তানকে বলে তোমার বাবা কে বল ? সবাই হাসে এবং বলে এটা কি করে সম্ভব তিন মাসের বাচ্চা কিভাবে কথা বলবে ওতো মানুষি হয় নি। মাঙস পিন্ড

জুরাইজ ডেকে বলল- পেটের বাচ্চা তুমি যদি এক আল্লাহর আদেশে মায়ের পেটে এসে থাক তোমাকে প্রশ্ন করবো তুমি উত্তর দাও তোমার বাবা কে? সকল মানুষকে অবাক করে দিয়ে বেশ্যার পেটের ভিতর থেকে আওয়াজ আসতে শুরু করলো বাচ্চাটি বলে আপনি আমার বাবা নন, আমার বাবা হচ্ছে ওই যে কোনায় দাড়িয়ে আছে রাখল ছেলেটি সে আমার বাবা। সবাই  বলে তুমিতো ভন্ড না আসলেই আল্লাহর অলী! আমাদেরকে মাফ  করে দাও

তাহলে দেখুন উনি এত বড় আল্লাহর অলী কিন্তু মায়ের বদ দোয়া থেকে রেহায় পায় নি। কত বড় নিয়ামত যে আমাদের ঘরে আছে অথচ আমরা চিনি না। সব কিছু তাদের উজার করে দিয়ে দাও। আমাদের জীবনটাকে উজালা করে দিবে আল্লাহ

এই গল্পটি যদি আপনার ভাল লেগে থাকে তাহলে শেয়ার করতে ভুলবেন না প্লিজ।  যে কোন অভিমত, বা সমালোচনা করার থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন অবশ্যই। ধন্যবাদ সবাইকে 
রচনা– এমআব্দুল্লাহ আল মামুন

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.