ভালবাসা এমন কেন
ভালবাসা এমন কেন
'দস্তগির
সরকার'
– সুদর্শন
আর
একে
বারেই
পাগলাটে
একটা
ছেলে। সারাদিন কাধে একটা গীটার নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। ভার্সিটির সবাই ওকে গীটারবয় বলেই ডাকে। নেকা মেয়ে গুলা যেন নাহিদ বলতেই অজ্ঞান। অথচ দুই চক্ষে সহ্য হয় না ছেলেটাকে আমার।
বি.বি.এ -৩য় বর্ষের ছাত্রী আমি। দস্তগির আমার ১বছর এর সিনিয়র। কোন কথা বার্তা ছাড়াই ও হঠাৎ একদিন আমকে প্রপস করে বসলো। কোন উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে গেলাম। পেছন ঘুরঘুর করে বিরক্ত করার ছেলে ও না। কোথা থেকে যেন আমার নাম্বারটা যোগাড় করেছে। প্রতিদিন রাতে শুধু একটা করে মেসেজ করত কখনো ফোন করেনি। কোন রিপ্লাই না দিয়ে শুধু ওর মেসেজ গুলো পড়তাম প্রতিদিন। ব্যাপারটা ধীরে ধীরে ভাল লাগতে শুরু করলো। মনের আড়ালেই কখন ভাললাগার বীজ বপন করে বসে আছি বুজতেই পারিনি।
পরপর
তিনদিন
ওর
কোন
মেসেজ
না
পেয়ে
কেমন
যেন
অস্থির
লাগছিল।
পরদিন
ভার্সিটিতে
মনে
মনে
ওকে
খুজতে
থাকলাম।
হঠাৎ
দেখি
সিমির
খুব
কাছাকাছি
বসে
ওকে
গান
শোনাচ্ছে।
বুকের
ভেতর
চেপে
থাকা
আগুনটা
যেন
এবার
দাউ
দাউ
করে
জ্বলে
উঠলো।
নিজেকে
আর
সামলাতে
পারলাম
না।
কিছু
চিন্তা
না
করেই
সবার
সামনে
বলে
দিলাম
ওকে
ভালবাসার
কথা।
সাথেসাথে
একটা
মুচকি
হাসি
দিয়ে
পেছন
থেকে
একটা
লাল
গোলাপ
বের
করে
দিল।
খানিকটা
অবাক
হলাম।
পরে
জানতে
পারলাম
মেসেজ
না
করা,
আমাকে
জেলাস
করা,
পুরোটাই
সাজানো
ছিল।
আর
তার
প্রধান
হাতিয়ার
ছিল
আমার
সবচেয়ে
কাছের
বান্ধবী
সিমি।
চোখের
জলটা
থামাতে
পারলাম
না।
সবার
সামনেই
কেদে
দিলাম।
একটা
কান্না
মানুষকে
এতটা
সুখ
দিতে
পারে
জীবনে
প্রথম
অনুভব
করলাম।
শুরু
হল
ভালবাসার
আকাশে
কষ্ট
সুখের
সাতরঙ
মিশিয়ে
একি
স্বপ্ন
দুটি
হৃদয়
দিয়ে
আঁকা।
ও
আমাকে
সুখ
পাখি
বলে
ডাকে।
ওর
পাগলামি
গুলা
যেন
একি
সাথে
আমকে
কাদাই
আবার
হাসাই।
অদ্ভুত
একটা
অনুভুতি।
আমাকে নিয়ে ওর গান। স্বপ্নের ভেলায় চড়ে তারার দেশে যাওয়া। হাত ধরে বৃষ্টিতে ভেজা। মাঝ রাতে আমকে দেখার নাম করে আমার বাড়ির সামনে এসে দাড়িয়ে থাকা। ক্লাস ফাকি দিয়ে মুভি দেখতে যাওয়া। একই স্বপ্ন হাজার বার ভেঙ্গে নতুন করে গড়া। সব কিছু মিলিয়ে যেন আমার একটা পৃথিবী সুখের স্বর্গ ও।
দেখতে দেখতে একটা বছর কেটে গেল। ওর বি.বি.এ শেষ হল আর আমি ৪র্থ বর্ষে উঠলাম। যে ভয়টা বুকের ভেতর সব সময় কাজ করত সেটাই হল। আমার আর দস্তগির এর সম্পর্কের কথাটা বাসাই জানা জানি হয়ে গেল।
আব্বু
আম্মুর
ইচ্ছের
বাইরে
আপু
পালিয়ে
গিয়ে
তার
ক্লাসমেট
সাদিক
ভাইয়াকে
বিয়ে
করে
ছিল।
ওদের
৪
বছর
এর
রিলেশান
বিয়ের
এক
বছরের
মাথাই
ছাড়া
ছাড়ি।
এ
ব্যাপারটাই
যেন
আমার
স্বাধীনতার
একমাত্র
ঘাতক।
সাময়িক
ভাবে
আমার
ভার্সিটি
যাওয়া
বন্ধ।
ফোনটাও
আব্বুর
কাছে।
এক
কথায়
বন্দি
আমি।
আপুর
ব্যাপারটার
পর
আব্বু
অনেক
অসুস্থ
হয়ে
পরেছিল
এখনো
সেই
ধকল
কাটিয়ে
উঠতে
পারেনি।
আব্বুর
ইচ্ছের
বাইরে
কিছু
বলা
মানে
তাকে
মৃত্যুর
পথে
একধাপ
এগিয়ে
নেয়া।
কিছুই
বলতে
পারলাম
না।
এক সপ্তাহের মধ্যে আমার বিয়ে ঠিক করলো আব্বুর ব্যবসায়ী বন্ধু রাজ্জাক আঙ্কেলের ছেলে তন্ময় এর সাথে। নিঃশব্দে কাদা ছাড়া কিছুই যেন করার নেই আমার।
এদিকে
দস্তগির
পাগল
এর
মত
চেষ্টা
করছে
আমার
সাথে
যোগাযোগ
করার।
কোন
উপায়
না
পেয়ে
সিমিকে
আমার
বাসায়
পাঠালো
খোজ
নেবার
জন্য।
মানুষটা
আমাকে
অন্ধের
মত
ভালবাসে।
এতবড়
অন্যায়
কি
করে
করবো
আমি।
কি
করে
কাদাবো
এই
মানুষটাকে।
ঠিক
করলাম
পালিয়ে
যাব।
সবাইকে
ফাকি
দিয়ে
অনেক
কষ্ট
করে
বাসা
থেকে
বেরও
হলাম।
কিন্তু
আপুর
চলে
যাওয়ার
পর
আব্বু
আম্মুর
কষ্ট
লজ্জা
সবকিছুর
ছবিটা
চোখের
সামনে
আবারও
ভেসে
উঠলো।
পারলাম
না।
একটা
ফোন
ফ্যাক্স
এর
দোকান
থেকে
কাদতে
কাদতে
দস্তগিরকে
সরি
বলে
অর্ধেক
রাস্তা
থেকেই
আবার
বাসাই
ফিরে
আসলাম।
এসে
দেখি
প্রত্যাশা
অনুরূপ
বাসার
সবাই
চুপচাপ
বসে
আছে।
যে
আব্বু
আমাকে
কোন
দিন
ধমক
দিয়ে
কথা
বলিনি
সে
আব্বু
আমার
গায়ে
হাত
তুললো।
সারারাত
কাঁদলাম।
কান্নাই
যেন
একমাত্র
সঙ্গী
এখন।
না
পারছি
আব্বু
আম্মুকে
কষ্ট
দিতে
না
পারছি
দস্তগিরকে
কাঁদাতে।
পরদিন
সকালে
রাজ্জাক
আঙ্কেল
এর
একটা
ফোন
আমার
জীবনটাতে
একই
সাথে
স্বাধিনতাও
পঙ্গুত্ব
দান
করলো।
ডাক্তার
এর
মেডিকেল
রিপোর্ট
অনুযায়ী
আমি
কোন
দিন
মা
হতে
পারবো
না।
বিয়েটা
ভেঙ্গে
গেল।
কাঁদবো
না
মুক্তির
নিঃশ্বাস
ফেলব
বুজতে
পারলাম
না।
শুধু
অবাক
হয়ে
থাকলাম।
দস্তগির এর সামনে দাঁড়ানোর মত মুখ আমার নেই। সিমির মাধ্যমে ও সব কিছু জানলো। আর সব জেনে শুনেই ওর আব্বুকে দিয়ে আবারও বিয়ের প্রস্তাব পাঠাল আমার বাসাই। প্রথম বার ফিরিয়ে দিলেও এবার আর পারলনা। কারণটা সহজ। আব্বু আম্মু স্বাভাবিক ভাবেই কিছুটা লজ্জিত হয়ে দস্তগির এর এক আকাশ সমান ভালবাসার কাছে হারমানল। পাওয়া না পাওয়াই আমার জীবনের সবচেয়ে কষ্টের আর সুখের দিন এটা।
দস্তগির এর সামনে দাঁড়ানোর মত মুখ আমার নেই। সিমির মাধ্যমে ও সব কিছু জানলো। আর সব জেনে শুনেই ওর আব্বুকে দিয়ে আবারও বিয়ের প্রস্তাব পাঠাল আমার বাসাই। প্রথম বার ফিরিয়ে দিলেও এবার আর পারলনা। কারণটা সহজ। আব্বু আম্মু স্বাভাবিক ভাবেই কিছুটা লজ্জিত হয়ে দস্তগির এর এক আকাশ সমান ভালবাসার কাছে হারমানল। পাওয়া না পাওয়াই আমার জীবনের সবচেয়ে কষ্টের আর সুখের দিন এটা।
পরদিন
দস্তগির
এর
অনুরোধেই
আব্বু
আম্মুর
অনুমতি
নিয়ে
ওর
সাথে
দেখা
করতে
গেলাম
। কথা বলার শক্তিটা যেন হারিয়ে ফেলছি। কাপতে কাপতে ওর সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম।
ও কাছে এসে আমার হাত ধরে বলল- আমি শুধু তোমাকে চাই হেনা আমার আর কিচ্ছু দরকার নেই বিশ্বাস করো আমার শুধু তোমাকে হলেই চলবে। বল আমকে আর কখনো ছেড়ে যাবানা তো ?
উত্তরে
কিছুই
বলতে
পারলাম
না।
বুক
ফেটে
কান্না
এলো।
ওর
এই
সীমাহীন
ভালবাসার
কাছে
আমি
খুবি
নগণ্য।
কোথাই
রাখবো
ওর
এতোটা
ভালবাসা।
কি
দিয়ে
শোধ
করবো
আমি।
সুখের
কান্নাটা
আর
থামাতে
পারলাম
না।
চোখের
সামনে
থাকা
স্বর্গটার
দিকে
তাকিয়ে
অঝোরে
কাঁদলাম।
ও
হাত
দিয়ে
চোখের
জ্বল
টুকু
মুছে
দিল।
ওকে হয়তো বাবা হবার সুখটা কোন দিনও আমি দিতে পারবো না। তবে আমার শেষ নিঃশ্বাসটা পর্যন্ত এক বিন্দু কষ্ট পেতে দিবো না ওকে। তাতে আমার মরন হলেও হাসতে হাসতে মেনে নেবো সেই মরণটাকে।
আমি ভালবাসি দস্তগির। অনেক বেশি ভালবাসি তোমাকে।
এই
গল্পটি
যদি
আপনার
ভাল
লেগে
থাকে
তাহলে
সেয়ার
করতে
ভুলবেন
না
প্লিজ।
যে
কোন
অভিমত,
বা
সমালোচনা
করার
থাকলে
কমেন্ট
করে
জানাবেন
অবশ্যই।
ধন্যবাদ
সবাইকে
।
রাচনা-এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন
কোন মন্তব্য নেই